নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লা তক্কার মাঠ এলাকায় রাইডার চালক নয়ন (৪৮) হত্যার ঘটনায় চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে।পুলিশের প্রাথমিক তদন্তে বেরিয়ে এসেছে স্ত্রী ও প্রেমিকের পরকীয়া জেরে পরিকল্পিতভাবে তাকে হত্যা করে দেহ খন্ড বিখন্ড করর ড্রামে লাশ ফেলে রাখা হয়।
পুলিশ জানায়, নয়নকে হত্যা করার পর তার স্ত্রী সাবিনা ওরফে সাবরিনা (৩৮) ও প্রেমিক রাসেল ওরফে ঠোঙ্গা রাসেল (৪২) মিলে লাশের টুকরো অংশ বিভিন্ন স্থানে ফেলে দেয়ার ভয়াবহ পরিকল্পনা করে। নৃশংস এ ঘটনায় স্ত্রী ও প্রেমিকসহ সাতজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। নিহত নয়ন দীর্ঘদিন ধরে মাদক ব্যবসার সঙ্গে জড়িত ছিল এবং দুটি সংসার চালাতেন।
দ্বিতীয় স্ত্রী সাবিনার সঙ্গে তিনি পিলকুনি এলাকায় ভাড়া বাসায় বসবাস করতেন। তিন বছর আগে একটি মাদক মামলায় সাজাপ্রাপ্ত হয়ে তিনি জেলে যান।
কারাগারে থাকাকালীন সময়েই সাবিনা প্রেমের সম্পর্কে জড়িয়ে পড়েন এলাকার রাসেলের সঙ্গে।
গত ১৯ সেপ্টেম্বর জামিনে মুক্তি পেয়ে নয়ন বাড়িতে ফিরে আসেন। পরে পশ্চিম দেলপাড়ায় নতুন ভাড়া বাসায় উঠলে স্ত্রীর পরকীয়ার বিষয়টি টের পান।এ নিয়ে দাম্পত্য কলহ চরমে পৌঁছায় এবং ৫ অক্টোবর দুপুরে পূর্বপরিকল্পিতভাবে সাবিনা ও রাসেল মিলে নয়নকে প্রথমে মাথায় লোহার রড দিয়ে আঘাত করে পরবর্তীতে ছোড়া দিয়ে নয়নের হত্যা নিশ্চিত করে।
পরদিন রাতে সাবিনা ও রাসেলসহ আরও কয়েকজন মিলে তার দেহ খণ্ড-বিখণ্ড করে।লাশের উপরের অংশ একটি ড্রামে ভরে উত্তর শিয়াচর এলাকার তক্কারমাঠের পাশে ফেলে দেয় এবং বিচ্ছিন্ন পা দুটি পিলকুনি সরকারি প্রাইমারি স্কুল সংলগ্ন এলাকায় ফেলে দেওয়া হয়।
৭ অক্টোবর বিকেলে পুলিশ ড্রামের ভেতর থেকে লাশ উদ্ধার করে।
পিবিআই ও সিআইডির সহায়তায় নিহতের পরিচয় নিশ্চিত হওয়ার পর জেলা পুলিশের তৎপরতায় সাতজনকে গ্রেপ্তার করা হয়।
গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন – স্ত্রী সাবিনা, প্রেমিক রাসেল, সহযোগী চয়ন (৩৮), জুয়েল (২৮), নোমান ওরফে মানিক (২৮), নয়নের মেয়ে সুমাইয়া (২০) ও সানজিদা (১৮)। তারা সবাই প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে হত্যাকাণ্ডের কথা স্বীকার করেছে।
তাদের স্বীকারোক্তি অনুযায়ী বিচ্ছিন্ন অঙ্গসহ আলামত উদ্ধার করা হয়েছে।
নয়নের বাবা আব্দুল সালাম বাদী হয়ে ফতুল্লা মডেল থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেন যাহার (নং-১২,০৮/১০/২৫ইং) ৩০২ ও ২০১ ধারায় মামলা হয়েছে।